গত কয়েক সপ্তাহ ধরে ইনস্টাগ্রাম ব্যবহারকারীরা ব্যাপকহারে অভিযোগ করছেন যে, কোনো নীতিমালা লঙ্ঘন না করেও তাঁদের অ্যাকাউন্ট ব্যানড (নিষিদ্ধ) বা সাসপেন্ড করা হচ্ছে। প্রযুক্তিবিষয়ক ওয়েবসাইট টেকক্রাঞ্চের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ব্যবহারকারীরা এই সমস্যার জন্য কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তানির্ভর স্বয়ংক্রিয় সিস্টেমকে দায়ী করছেন।
ইনস্টাগ্রামের মূল কোম্পানি মেটার পক্ষ থেকে এ বিষয়ে এখনো আনুষ্ঠানিক কোনো মন্তব্য পাওয়া যায়নি।
রেডিট ও এক্স (সাবেক টুইটার) প্ল্যাটফর্মে অভিযোগের বন্যা বইছে। ব্যবহারকারীরা বলছেন, তাঁরা ইনস্টাগ্রাম কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন করেও কোনো সাড়া পাচ্ছেন না। মেটার কোনো প্রতিনিধির সঙ্গে সরাসরি যোগাযোগের সুযোগ না থাকায় তাঁরা হতাশ। একজন রেডিট ব্যবহারকারী লিখেছেন, "মনে হচ্ছে আমি শূন্যে চিৎকার করছি।"
উল্লেখ্য, মেটার 'ভেরিফাইড অ্যাকাউন্ট সাবস্ক্রিপশন' ব্যবহারকারীরা কাস্টমার সার্ভিসের অগ্রাধিকার পেলেও সাধারণ ব্যবহারকারীরা সেই সুবিধা থেকে বঞ্চিত।
রেডিট ও এক্সে ইনস্টাগ্রাম সম্পর্কিত শীর্ষ পোস্টগুলো এখন কেবল এই ব্যান-সংক্রান্ত অভিযোগে পরিপূর্ণ। Change.org-এ এই ব্যান নিয়ে একটি গণ-আবেদনে ইতিমধ্যে ৪ হাজারের বেশি স্বাক্ষর পড়েছে। পরিস্থিতি এতটাই গুরুতর যে, অনেকে মেটার বিরুদ্ধে ক্লাস অ্যাকশন মামলা করার হুমকিও দিয়েছেন।
যদিও ইন্টারনেটভিত্তিক বড় প্রতিষ্ঠানগুলোতে স্বয়ংক্রিয় মডারেশন সিস্টেমের কারণে কিছু অ্যাকাউন্ট ভুলক্রমে ব্যান হওয়া অস্বাভাবিক নয়, তবে বর্তমান পরিস্থিতিতে বিপুলসংখ্যক অ্যাকাউন্ট ব্যান হওয়া উদ্বেগের কারণ। ব্যবহারকারীদের প্রাথমিক সন্দেহ, এর পেছনে রয়েছে এআই। চলতি বছরের শুরুতে পিন্টারেস্টও এমন এক গণ-ব্যান সমস্যার সম্মুখীন হয়েছিল। তারা একে 'অভ্যন্তরীণ ত্রুটি' বললেও স্পষ্টভাবে এআইকে দায়ী করেনি।
ইনস্টাগ্রামের এই সমস্যা কেবল ব্যক্তিগত ব্যবহারেই সীমাবদ্ধ নয়, এর প্রভাব পড়ছে ব্যবহারকারীদের জীবিকা ও ব্যবসার ওপরও। অনেক উদ্যোক্তা ও পেশাদার তাঁদের ক্লায়েন্ট ও গ্রাহক পাওয়ার জন্য এই অ্যাপের ওপর নির্ভর করেন। একজন রেডিট ব্যবহারকারী লিখেছেন, "এটা আমার জীবিকার একমাত্র মাধ্যম।"
আরও উদ্বেগজনক বিষয় হলো, কিছু ব্যবহারকারীর অ্যাকাউন্ট গুরুতর অভিযোগে ব্যান করা হয়েছে, যা তাঁরা করেননি, যেমন—শিশু যৌন নিপীড়ন। এ ধরনের অভিযোগ ব্যক্তির ক্যারিয়ার ও সামাজিক সম্মান ধ্বংস করতে পারে।
এই পরিস্থিতিতে মেটার নীরবতা এবং সমাধানের কোনো অগ্রগতি না থাকায় ব্যবহারকারীদের মধ্যে ক্ষোভ ক্রমাগত বাড়ছে। মেটা এখনও এ বিষয়ে কোনো আনুষ্ঠানিক মন্তব্য করেনি।